রাজসাক্ষীর জবানবন্দি
তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট
- আপলোড সময় : ০৪-০৯-২০২৫ ০৮:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৪-০৯-২০২৫ ০৮:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
গত বছরের ৫ আগস্ট সকালে পুলিশ সদর দপ্তরের নিজ কার্যালয়ে যান তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ইতিমধ্যে উত্তরা, যাত্রাবাড়ী এবং বিভিন্ন পথ দিয়ে ¯্রােতের মতো ছাত্র-জনতা ঢাকা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। সেদিন দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে তিনি জানতে পারেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গত মঙ্গলবার দেওয়া জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ কথা বলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে দেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এই প্রথম কোনো আসামি অপরাধ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে জবানবন্দি দিলেন।
ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা কোথায় যাবেন, তা জানতেন না বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন সাবেক এই আইজিপি। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, সেদিন (৫ আগস্ট, ২০২৪ সাল) বিকেলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার এসে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তাঁদের প্রথম তেজগাঁও বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ক্যান্টনমেন্টের অফিসার্স মেসে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে ক্যান্টনমেন্টে যান তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার, এসবির প্রধান ও আমেনা বেগম (তৎকালীন ডিআইজি)। তার পরের পালায় তৎকালীন অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার, অতিরিক্ত ডিআইজি লুৎফুল কবিরসহ অন্যদেরও ক্যান্টনমেন্টে নেওয়া হয় হেলিকপ্টারে করে।
গত বছরের ৬ আগস্ট আইজিপি হিসেবে চুক্তি বাতিল করা হয় বলে জানান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, ক্যান্টনমেন্টে অবস্থানকালীন তাকে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।
গণ-অভ্যুত্থানের সময় (২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে) সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়। গত ১০ জুলাই তিনি এ মামলায় দোষ স্বীকার করে নিয়ে অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ার আবেদন করেন ট্রাইব্যুনালে। তার আবেদন সেদিনই মঞ্জুর করা হয়, তবে অ্যাপ্রুভার হিসেবে জবানবন্দি দিলেন গত মঙ্গলবার। তিনিসহ এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জন সাক্ষী জবানবন্দি দিলেন।
জবানবন্দিতে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। প্রত্যেক শহীদের পরিবার, আহত ব্যক্তি, দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেছেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা পেয়েছিলেন তিনি। সেদিন থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহার শুরু হয়েছিল। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ